'সিজদাহ্' আরবি শব্দ। এর অর্থ মাথা অবনতকরণ। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য বান্দা তার কপাল জমিনে রাখাকে সিজদাহ্ বলে।
সিজদাহ্র প্রকারভেদ
ফরজ সিজদাহ্: মানুষ নামায আদায়ের সময় যেসব সিজদাহ্ দিয়ে থাকে তাকে ফরজ সিজদাহ্ বলে।
ওয়াজিব সিজদাহ্: ভুলবশত নামাযে কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে এবং সিজদাহর আয়াত তিলাওয়াত করলে যে সিজদাহ্ দিতে হয় তাকে ওয়াজিব সিজদাহ্ বলে।
মুস্তাহাব সিজদাহ্: কোনো নিয়ামতপ্রাপ্ত হলে, বিপদমুক্ত হলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশে যে সিজদাহ্ দেওয়া হয় তাকে মুস্তাহাব সিজদাহ্ বলে।
সিজদায়ে সাহু সিজদায়ে সাহু অর্থ ভুলের জন্য সিজদাহ্। ভুলবশত নামাযে ওয়াজিব বাদ পড়লে, তা সংশোধনের জন্য নামাযের শেষ বৈঠকে দুটি সিজদাহ করা হয়, একেই সিজদায়ে সাহু বলে।
সিজদায়ে সাহু আদায় করার নিয়ম
নামাযের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়ার পর ডান দিকে সালাম ফেরাব। তারপর 'আল্লাহু আকবার' বলে নামাযের সিজদাহর ন্যায় দুটি সিজদাহ্ করে তাশাহহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসূরা পড়ব। তারপর দুইদিকে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করব। সিজদায়ে সাহু সম্পর্কে মহানবি (স.) বলেন, 'আমি তোমাদের ন্যায় একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুলে যাও, আমিও তেমনি ভুলে যাই। সুতরাং যখন আমি ভুলে যাব তখন তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দেবে। যখন তোমাদের কেউ নামাযের মধ্যে সন্দেহ করবে তখন সে গভীর চিন্তা করে সঠিক বিষয়টি ঠিক করে নেবে। অতঃপর এর উপর ভিত্তি করে নামায পূর্ণ করবে এবং সালাম দিয়ে দুটি সিজদাহ্ করবে।' (বুখারি ও মুসলিম)
সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হওয়ার কারণ
১. ভুলবশত নামাযের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে। ২. নামাযের কাজগুলো পরপর আদায় করতে বিলম্ব
করলে (যেমন: সূরা ফাতিহা পড়ার পর চুপ করে থাকলে, কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর কোনো সূরা পড়লে)। ৩. কোনো ফরজ আদায় করতে বিলম্ব হলে। ৪. নামায আদায়ে ধারাবাহিকতার ব্যতিক্রম হলে (যেমন: রুকুর আগেই সিজদাহ্ করলে)। ৫. কোনো ফরজ একবারের স্থলে একাধিকবার করলে। ৬. কোনো ওয়াজিবের রূপ পরিবর্তন করলে (যেমন: সরবে তিলাওয়াতের স্থলে নীরবে এবং নীরবে তিলাওয়াতের স্থলে সরবে পড়লে)। মনে রাখা দরকার, প্রথম বৈঠক করতে ভুলে গেলে যদি দাঁড়ানোর পূর্বেই মনে পড়ে তাহলে বসে যাব এবং বৈঠক পূর্ণ করব। আর যদি দাঁড়ানোর পর মনে পড়ে তাহলে বসব না। নামায শেষে সাহু সিজদাহ্ করব।
| কাজ: সিজদাহ্ সাহু ওয়াজিব হওয়ার কারণগুলো ছক আকারে লিখে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে। | 
Read more